খাদ্য মানে হল সেই পদার্থ বা দ্রব্যায়ন, যা মানুষের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং তার জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি ও শক্তিশালী হওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। খাদ্য সাধারণত স্থায়ী ও অস্থায়ী হতে পারে এবং এটি সমগ্র প্রাণির জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের জন্য খাদ্যের সমন্বয়ে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট, মিনারেল, ফ্যাট ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান যা তাদের স্বাস্থ্যকে বজায় রাখে এবং উন্নত অবস্থায় রক্ষা করে।
সংজ্ঞা:
খাদ্য হলো সেই সকল খাবার যা আমাদের শরীরের বৃদ্ধি, পুষ্টি, শক্তি উৎপাদন ও ক্ষয়পূরণের জন্য প্রয়োজনীয়। এগুলো আমাদের দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, যেমন প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং জল সরবরাহ করে।
খাদ্যের প্রকারভেদ:
- প্রোটিনজাত খাদ্য: মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, শিমের বীজ, শুঁটকি মাছ, চিনাবাদাম ইত্যাদি।
- কার্বোহাইড্রেটজাত খাদ্য: ভাত, গম, পাউরুটি, আলু, মিষ্টি, ফল, শাকসবজি ইত্যাদি।
- স্নেহপদার্থ / ফ্যাটজাত খাদ্য: তেল, ঘি, মাখন, বাদাম, সয়াবিন তেল ইত্যাদি।
- ভিটামিনযুক্ত খাদ্য: ফল, শাকসবজি, দুধ, ডিম, মাছের লিভার ইত্যাদি।
- খনিজ লবণযুক্ত খাদ্য: লবণ, শাকসবজি, ফল, মাছ, মাংস, দুধ ইত্যাদি।
- জল : জল আমাদের দেহের ৭০% অংশ গঠন করে।
খাদ্যের গুরুত্ব:
- শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশ: খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে যা আমাদের শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে।
- শক্তি সরবরাহ: খাদ্য আমাদের শরীরে শক্তি সরবরাহ করে যা আমাদের কাজকর্ম করতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: খাদ্যে থাকা ভিটামিন ও খনিজ লবণ আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- মানসিক বিকাশ: খাদ্যে থাকা কিছু পুষ্টি উপাদান আমাদের মানসিক বিকাশে সাহায্য করে।
- ত্বক ও চুলের যত্ন: খাদ্যে থাকা কিছু পুষ্টি উপাদান ত্বক ও চুলের যত্ন নেয়।
সুষম খাদ্য:
সুষম খাদ্য হলো এমন খাদ্য যাতে আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। সুষম খাদ্যে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং জল সঠিক অনুপাতে থাকে।
সুষম খাদ্য গ্রহণের ফলে:
- আমাদের শরীর সুস্থ থাকে।
- আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- আমরা মানসিকভাবে ভালো থাকি।
- আমাদের ত্বক ও চুল সুন্দর থাকে।
আমাদের খাদ্যাভ্যাস উন্নত করার জন্য:
- আমাদের প্রতিদিন সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।
- আমাদের প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজি খাওয়া উচিত।
- আমাদের প্রতিদিন ৮ গ্লাস জল পান করা উচিত।
- আমাদের তেল-মশলাযুক্ত খাবার কম খাওয়া উচিত।
- আমাদের প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।
খাদ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া: একটি চার্ট
ধাপ | বর্ণনা |
---|---|
1. মুখে প্রবেশ | আমরা আমাদের মুখ দিয়ে খাবার গ্রহণ করি। |
2. চিবানো | আমাদের দাঁত খাবারকে ছোট ছোট টুকরো করে চিবায়। |
3. লালা মিশ্রণ | লালা খাবারের সাথে মিশে তাকে ভেজা করে এবং এনজাইম যোগ করে যা খাদ্য ভাঙতে সাহায্য করে। |
4. গিলে ফেলা | জিহ্বা খাবারকে গলার পিছনের অংশে ধাক্কা দেয়, যেখান থেকে এটি খাদ্যনালীতে প্রবেশ করে। |
5. খাদ্যনালীতে যাত্রা | খাদ্যনালী মাংসপেশীর সংকোচনের মাধ্যমে খাবারকে পেটে ধাবিত করে। |
6. পেটে হজম | পেটে, অ্যাসিড এবং এনজাইম খাবারকে আরও ভেঙে ফেলে। |
7. ক্ষুদ্রান্ত্রে শোষণ | ক্ষুদ্রান্ত্রে, পুষ্টি উপাদান রক্ত প্রবাহে শোষিত হয়। |
8. বৃহদান্ত্রে জল শোষণ | বৃহদান্ত্রে , অবশিষ্ট জল শোষিত হয় এবং মল তৈরি হয়। |
9. মল নিষ্কাশন | মল মলদ্বার থেকে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। |