বায়োফিজিক্যাল পরীক্ষা (Biophysical Examination):
বায়োফিজিক্যাল পরীক্ষা হল এমন একধরনের পরীক্ষা যা জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং ঘটনাকে শারীরিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ এবং মাপজোক করে। এই পরীক্ষাগুলি জীবন্ত সিস্টেমের বিভিন্ন শারীরিক বৈশিষ্ট্য যেমন কোষের আকার, আকৃতি, গঠন, গতিবিধি, মেকানিক্যাল বৈশিষ্ট্য এবং তাপগতীয় গুণাবলী নির্ণয়ে সহায়ক।
বায়োফিজিক্যাল পরীক্ষার উদাহরণগুলি হলো:
- এলাস্টোগ্রাফি: কোষ বা টিস্যুর ইলাস্টিসিটি বা স্থিতিস্থাপকতা মাপার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- আলোকীয় মাইক্রোস্কোপি: বিভিন্ন আলোক তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মাধ্যমে কোষ বা টিস্যুর গঠন এবং প্রোটিনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
- অপটিক্যাল টুইজার: কোষ বা ন্যানোপার্টিকেলগুলিকে আলোর সাহায্যে ধরে রাখার এবং নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি।
- এটমিক ফোর্স মাইক্রোস্কোপি (AFM): কোষের পৃষ্ঠের টপোগ্রাফি এবং মেকানিক্যাল বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।
বায়োফিজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে জীববিজ্ঞানের নানা জটিল প্রক্রিয়া ও গুণাবলী সম্পর্কে আরও গভীর এবং সুনির্দিষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
বায়োফিজিক্যাল পরীক্ষার মধ্যে রেডিওলজি পরীক্ষাগুলিও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রেডিওলজি এমন একটি শাখা যেখানে রেডিওগ্রাফিক ইমেজিং ব্যবহার করে শরীরের অভ্যন্তরীণ কাঠামো এবং কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই পরীক্ষাগুলি রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং বিভিন্ন শারীরিক অবস্থার মূল্যায়নে ব্যবহৃত হয়।
রেডিওলজি পরীক্ষার মধ্যে কিছু সাধারণ পরীক্ষা হলো:
এক্স-রে (X-ray):
- সাধারণত হাড়ের ভাঙন, সংযোগস্থল এবং কিছু নরম টিস্যুর অবস্থান নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।
সিটি স্ক্যান (CT Scan):
- শরীরের ভিতরের ক্রস-সেকশনাল ইমেজ তৈরি করতে এক্স-রে ব্যবহার করে। এটি টিউমার, আভ্যন্তরীণ রক্তপাত এবং অন্যান্য আভ্যন্তরীণ সমস্যা সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।
এমআরআই (MRI):
- শক্তিশালী চুম্বক এবং রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে শরীরের বিস্তারিত ইমেজ তৈরি করা হয়। মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, জয়েন্ট এবং নরম টিস্যুর সমস্যাগুলি নির্ণয়ে এটি খুব কার্যকর।
আল্ট্রাসাউন্ড (Ultrasound):
- উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে শরীরের ভিতরের কাঠামোর ইমেজ তৈরি করা হয়। গর্ভাবস্থা, হৃৎপিণ্ডের কার্যকলাপ এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের মূল্যায়নে ব্যবহৃত হয়।
পিইটি স্ক্যান (PET Scan):
- রেডিওধর্মী পদার্থ ব্যবহার করে শরীরের মেটাবলিক এবং শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা হয়। ক্যান্সার নির্ণয় এবং চিকিৎসার কার্যকারিতা মূল্যায়নে ব্যবহৃত হয়।