** Study Nutrition ওয়েবসাইটে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাগত ** নিউট্রিশন সাবজেক্ট এর প্রথম বাংলা ওয়েবসাইট **

3.4 Chemical properties of Fat namely Saponification, Hydrolysis, Hydrogenation, Rancidity (ফ্যাট এর রাসায়নিক ধর্মগুলি [যেমন - সাফোনিফিকেশন, হাইড্রোলিসিস, হাইড্রোজেনেশন ও র‍্যান্সিডিটি])

ফ্যাটের রাসায়নিক ধর্মগুলি এর বিভিন্ন রূপান্তর এবং প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে বোঝা যায়। নিচে সাপোনিফিকেশন, হাইড্রোলিসিস, হাইড্রোজেনেশন, এবং র‌্যান্সিডিটির সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

সাপোনিফিকেশন (Saponification):

সাপোনিফিকেশন হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ফ্যাট বা তেল ক্ষার (বেস) দ্বারা হাইড্রোলাইজড হয়ে গ্লিসারল এবং ফ্যাটি অ্যাসিডের লবণ (সাবান) উৎপন্ন করে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, বিশেষ করে সাবান তৈরিতে।

রাসায়নিক সমীকরণ:

Fat+NaOHGlycerol+Soap (Fatty acid salt)

উদাহরণ:

C3H5(OOCR)3+3NaOHC3H5(OH)3+3RCOONa

হাইড্রোলিসিস (Hydrolysis):

হাইড্রোলিসিস হলো একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জলের প্রভাবে একটি যৌগ ভেঙে দুটি বা ততোধিক নতুন যৌগে পরিণত হয়। ফ্যাট বা তেল হাইড্রোলিসিসের মাধ্যমে গ্লিসারল এবং ফ্যাটি অ্যাসিডে ভেঙে যায়

রাসায়নিক সমীকরণ:

Fat+WaterGlycerol+Fatty acids

উদাহরণ:

C3H5(OOCR)3+3H2OC3H5(OH)3+3RCOOH

এখানে,

  • C3H5(OOCR)3\text{C}_{3}\text{H}_{5}(\text{OOCR})_{3} হলো ট্রাইগ্লিসারাইড,
  • C3H5(OH)3\text{C}_{3}\text{H}_{5}(\text{OH})_{3} হলো গ্লিসারল,
  • RCOOH\text{RCOOH} হলো ফ্যাটি অ্যাসিড।

উদাহরণ চিত্র:

Triglyceride Water
| |
V V
_______ H2O _______
| | + ---> | |
| Fat | | Glycerol |
|_______| |_______|
+ 3 Fatty Acids

হাইড্রোজেনেশন (Hydrogenation):

হাইড্রোজেনেশন একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডে হাইড্রোজেন যোগ করে স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় অসম্পৃক্ত ফ্যাটের মধ্যে থাকা দ্বৈত বন্ধন ভেঙে যায় এবং সেখানে হাইড্রোজেন পরমাণু যুক্ত হয়। এই প্রক্রিয়াটি সাধারণত একটি ধাতব অনুঘটকের উপস্থিতিতে করা হয়, যেমন নিকেল (Ni), প্যালাডিয়াম (Pd), বা প্লাটিনাম (Pt)।

হাইড্রোজেনেশনের প্রক্রিয়া:

  1. অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডে হাইড্রোজেন যোগ করা:
    • দ্বৈত বন্ধন ভেঙে যায় এবং প্রতিটি কার্বন পরমাণুতে হাইড্রোজেন পরমাণু যোগ হয়।
  2. অনুঘটকের উপস্থিতি:
    • ধাতব অনুঘটক যেমন নিকেল, প্যালাডিয়াম বা প্লাটিনাম ব্যবহৃত হয় যা প্রতিক্রিয়াটি দ্রুত এবং দক্ষ করে।

রাসায়নিক সমীকরণ:

Unsaturated fat+H2Saturated fat

উদাহরণ:

R-CH=CH-R+H2R-CH2-CH2-R

এখানে,

  • R-CH=CH-R\text{R-CH=CH-R} হলো অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড।
  • R-CH2-CH2-R\text{R-CH}_2\text{-CH}_2\text{-R} হলো স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড।

উদাহরণ: 

ওলিক অ্যাসিড (Olein) থেকে স্টিয়ারিক অ্যাসিড (Stearic Acid) তৈরি

C17H33COOH+H2C17H35COOH

হাইড্রোজেনেশনের প্রয়োগ:

  1. মার্জারিন ও শর্টেনিং তৈরিতে:

    • খাদ্যশিল্পে তেলকে কঠিন ফ্যাটে পরিণত করতে হাইড্রোজেনেশন প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, মার্জারিন এবং বেকারি পণ্য তৈরিতে।
  2. স্ট্যাবিলিটি বৃদ্ধি করা:

    • হাইড্রোজেনেশনের মাধ্যমে ফ্যাটের স্থায়িত্ব বাড়ানো যায়, ফলে তা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। অক্সিডেশন প্রতিরোধ করার জন্য হাইড্রোজেনেটেড তেল ব্যবহৃত হয়।

উদ্ভিজ্জ তেলের হাইড্রোজেনেশনের ফলে পুষ্টিগত ও গঠনগত ফলাফল:

হাইড্রোজেনেশন প্রক্রিয়া

উদ্ভিজ্জ তেলের হাইড্রোজেনেশন হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে তেলের অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডে হাইড্রোজেন যোগ করা হয়, যাতে তা স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়া সাধারণত একটি ধাতব অনুঘটকের (যেমন নিকেল) উপস্থিতিতে ঘটে।

গঠনগত ফলাফল:

  1. ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিবর্তন:

    • অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড (যেমন ওলিক অ্যাসিড) স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (যেমন স্টিয়ারিক অ্যাসিড) হয়ে যায়।
    • কিছু ক্ষেত্রে আংশিক হাইড্রোজেনেশনের মাধ্যমে ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি হয়।
  2. তেলের অবস্থা:

    • তরল উদ্ভিজ্জ তেল সেমি-সলিড বা সলিড ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়, যা মার্জারিন, শর্টেনিং ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
    • স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে তেলের গলনাঙ্ক বৃদ্ধি পায়, যা উচ্চ তাপমাত্রায় ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে।

পুষ্টিগত ফলাফল:

  1. স্যাচুরেটেড ফ্যাটের বৃদ্ধি:

    • স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ায়, যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  2. ট্রান্স ফ্যাটের উৎপাদন:

    • আংশিক হাইড্রোজেনেশনের ফলে ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ট্রান্স ফ্যাট LDL (খারাপ) কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং HDL (ভাল) কোলেস্টেরল কমায়, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
  3. ভিটামিনের প্রভাব:

    • হাইড্রোজেনেশন প্রক্রিয়ার ফলে তেলে থাকা কিছু ভিটামিন যেমন ভিটামিন E এর পরিমাণ কমে যেতে পারে।

পুষ্টিগত ও গঠনগত ফলাফলের বিশ্লেষণ:

গঠনগত:

  1. মার্জারিন এবং শর্টেনিং:
    • হাইড্রোজেনেশনের ফলে উদ্ভিজ্জ তেল সেমি-সলিড বা সলিড ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়, যা মার্জারিন এবং বেকারি পণ্যে ব্যবহৃত হয়।
  2. উচ্চ তাপমাত্রায় স্থায়িত্ব:
    • স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ায়, ফলে তেলের স্থায়িত্ব এবং উচ্চ তাপমাত্রায় ব্যবহারের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এটি ভাজা খাবার তৈরিতে কার্যকরী হয়।

পুষ্টিগত:

  1. হৃদরোগের ঝুঁকি:

    • স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাটের উপস্থিতি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি খেলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে, যা আর্টারি ব্লক করতে পারে।
  2. মোট ক্যালোরির বৃদ্ধি:

    • হাইড্রোজেনেটেড তেল এবং ফ্যাটের উচ্চ ক্যালোরি বিষয়ক মান খাদ্যদ্রব্যের মোট ক্যালোরির পরিমাণ বৃদ্ধি করে, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
  3. ভিটামিন এবং পুষ্টির হ্রাস:

    • ভিটামিন E এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কমে যেতে পারে, যা শরীরের পুষ্টির মাত্রা হ্রাস করতে পারে।

উদ্ভিজ্জ তেল ও বনস্পতির তুলনামূলক আলোচনা:

উদ্ভিজ্জ তেল ও বনস্পতির মধ্যে কিছু মূল পার্থক্য রয়েছে, যা নিচে উল্লেখ করা হলো:

উদ্ভিজ্জ তেল (Vegetable Oil):

  1. উৎপত্তি: উদ্ভিজ্জ তেল সাধারণত উদ্ভিদের বীজ, ফল, বা শাকসবজি থেকে নিষ্কাশিত হয়। যেমন সূর্যমুখী, সরিষা, সয়াবিন, নারিকেল ইত্যাদি।

  2. প্রসেসিং: উদ্ভিজ্জ তেল সাধারণত কোল্ড প্রেসিং বা রিফাইনিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। এতে তেলের প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ বজায় থাকে।

  3. পুষ্টি: উদ্ভিজ্জ তেলে উচ্চ পরিমাণে অসম্পৃক্ত চর্বি (unsaturated fat) থাকে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। এছাড়া এতে ভিটামিন ই এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডও থাকে।

  4. ব্যবহার: উদ্ভিজ্জ তেল রান্না, বেকিং, সালাদ ড্রেসিং ইত্যাদি কাজে ব্যবহার হয়।

বনস্পতি (Vanaspati):

  1. উৎপত্তি: বনস্পতি মূলত উদ্ভিজ্জ তেল থেকে হাইড্রোজেনেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। এটি একটি প্রক্রিয়াজাত পণ্য।

  2. প্রসেসিং: বনস্পতি তৈরির সময় উদ্ভিজ্জ তেলকে হাইড্রোজেন দিয়ে কঠিন করে তোলা হয়, যা তেলে থাকা অসম্পৃক্ত ফ্যাটকে সম্পৃক্ত ফ্যাটে রূপান্তরিত করে।

  3. পুষ্টি: বনস্পতি সাধারণত ট্রান্স ফ্যাট (trans fat) সমৃদ্ধ থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

  4. ব্যবহার: বনস্পতি সাধারণত গhee বা মাখনের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়। এটি ভারতীয় রান্নায়, বিশেষ করে মিষ্টি ও ভাজাভুজির ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়।

তুলনামূলক আলোচনা:

  1. স্বাস্থ্য প্রভাব: উদ্ভিজ্জ তেল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও বনস্পতি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে, বিশেষ করে হৃদরোগের ক্ষেত্রে।

  2. রান্নায় ব্যবহার: উদ্ভিজ্জ তেল সাধারণত স্বাস্থ্যকর রান্নার জন্য ব্যবহৃত হয়, আর বনস্পতি প্রায়শই প্রথাগত ও মিষ্টি খাবারের জন্য ব্যবহৃত হয়।

  3. প্রক্রিয়াজাতকরণ: উদ্ভিজ্জ তেল প্রাকৃতিক ও সরাসরি ব্যবহার করা যায়, যেখানে বনস্পতি একটি প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং এর প্রস্তুত প্রক্রিয়া আরও জটিল।

উদ্ভিজ্জ তেল ও বনস্পতির মধ্যে পার্থক্যগুলো একটি চার্টের মাধ্যমে দেখানো হলো:

বিষয়উদ্ভিজ্জ তেল (Vegetable Oil)বনস্পতি (Vanaspati)
উৎপত্তিউদ্ভিদের বীজ, ফল, বা শাকসবজি থেকেউদ্ভিজ্জ তেল থেকে হাইড্রোজেনেশন প্রক্রিয়ায়
প্রসেসিংকোল্ড প্রেসিং বা রিফাইনিংহাইড্রোজেনেশন (Hydrogenation) প্রক্রিয়া
ফ্যাট কন্টেন্টঅসম্পৃক্ত চর্বি (Unsaturated fat)সম্পৃক্ত চর্বি (Saturated fat) ও ট্রান্স ফ্যাট (Trans fat)
পুষ্টিগুণউচ্চ ভিটামিন ই, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডকম পুষ্টিগুণ, উচ্চ ট্রান্স ফ্যাট
স্বাস্থ্য প্রভাবহৃদযন্ত্রের জন্য উপকারীহৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়
ব্যবহাররান্না, বেকিং, সালাদ ড্রেসিং ইত্যাদিগhee বা মাখনের বিকল্প হিসেবে, মিষ্টি ও ভাজাভুজি
স্বাদসাধারণ স্বাদ, খাবারের স্বাদ বাড়ায়কিছুটা গhee বা মাখনের মতো স্বাদ
রূপতরলসাধারণত কঠিন বা আধা-কঠিন

ট্রান্স ফ্যাট (Trans Fat) এবং হাইড্রোজেনেশন:

হাইড্রোজেনেশনের সময় একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে যেখানে কিছু অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিণত হয়। ট্রান্স ফ্যাটের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে, যেমন হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি। তাই আধুনিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সম্পূর্ণ হাইড্রোজেনেশন প্রক্রিয়াটি প্রাধান্য পায় যাতে ট্রান্স ফ্যাট উৎপাদনের সম্ভাবনা কমানো যায়।

র‌্যান্সিডিটি (Rancidity):

র‌্যান্সিডিটি হলো ফ্যাট বা তেলের এমন একটি অবস্থা যা তাদের স্বাদ এবং গন্ধ খারাপ করে দেয়। এটি সাধারণত অক্সিডেশন বা হাইড্রোলিসিসের ফলে ঘটে এবং খাদ্যদ্রব্যের পুষ্টিমান ও স্বাদ উভয়ই হ্রাস করে।

র‌্যান্সিডিটির ধরনসমূহ:

  1. অক্সিডেটিভ র‌্যান্সিডিটি (Oxidative Rancidity):

    • অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডে অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে অক্সিডাইজড পদার্থ (যেমন, পার-অক্সাইড) তৈরি হয়, যা তিক্ত গন্ধ এবং স্বাদ তৈরি করে।
    • এই প্রক্রিয়া সাধারণত ফ্যাট বা তেলের মধ্যে উপস্থিত দ্বৈত বন্ধনের কারণে ঘটে।

    রাসায়নিক প্রক্রিয়া:

    RH+O2R-O-O-H

    যেখানে RH হলো অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড এবং R-O-O-H\text{R-O-O-H} হলো পেরক্সাইড।

  2. হাইড্রোলিটিক র‌্যান্সিডিটি (Hydrolytic Rancidity):

    • জলীয় পরিবেশে ফ্যাট বা তেল হাইড্রোলাইসিসের মাধ্যমে ভেঙে গ্লিসারল এবং ফ্যাটি অ্যাসিড উৎপন্ন করে, যা খারাপ গন্ধ এবং স্বাদ সৃষ্টি করে।
    • এনজাইম যেমন লিপেজ (Lipase) এই প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে পারে।

    রাসায়নিক প্রক্রিয়া:

    Fat+H2OGlycerol+Free Fatty Acids
  3. কেটোনিক র‌্যান্সিডিটি (Ketonic Rancidity):

    • কিছু নির্দিষ্ট মাইক্রোঅর্গানিজম ফ্যাটের অসম্পৃক্ত অংশে কাজ করে কেটোন উৎপন্ন করে, যা র‌্যান্সিড গন্ধ সৃষ্টি করে।

র‌্যান্সিডিটির কারণসমূহ:

  • অক্সিজেন: ফ্যাট বা তেল অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে অক্সিডাইজড হয়ে র‌্যান্সিড হয়ে যেতে পারে।
  • আলো: আলো, বিশেষ করে অতিবেগুনী (UV) আলো, ফ্যাটের অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
  • তাপমাত্রা: উচ্চ তাপমাত্রায় ফ্যাট বা তেলের অক্সিডেশন দ্রুত ঘটে, ফলে র‌্যান্সিডিটি বাড়ে।
  • জলীয় অবস্থা: জলের উপস্থিতিতে ফ্যাট বা তেলের হাইড্রোলিসিস হতে পারে, যা র‌্যান্সিডিটি সৃষ্টি করে।
  • ধাতু: কিছু ধাতু যেমন আয়রন (Fe) এবং কপার (Cu) অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

র‌্যান্সিডিটি প্রতিরোধের উপায়:

  1. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্যবহার: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন E, BHA (Butylated Hydroxyanisole), এবং BHT (Butylated Hydroxytoluene) অক্সিডেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  2. নির্জল অবস্থা: ফ্যাট বা তেলকে জলীয় পরিবেশ থেকে দূরে রাখা।
  3. আলো থেকে সুরক্ষা: আলো-বিরোধী প্যাকেজিং ব্যবহার করে ফ্যাট বা তেলকে আলোর সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করা।
  4. নিম্ন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ: ফ্যাট বা তেলকে ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করা।
  5. নির্মূল ধাতু আয়ন: ধাতব কনটেইনারের পরিবর্তে কাচ বা প্লাস্টিকের কনটেইনার ব্যবহার করা।

সংক্ষেপে:

  • সাপোনিফিকেশন: ফ্যাট বা তেল ক্ষারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে গ্লিসারল এবং সাবান তৈরি করে।
  • হাইড্রোলিসিস: ফ্যাট বা তেল পানির সঙ্গে বিক্রিয়া করে গ্লিসারল এবং ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করে।
  • হাইড্রোজেনেশন: অসম্পৃক্ত ফ্যাটে হাইড্রোজেন যোগ করে স্যাচুরেটেড ফ্যাট তৈরি করে।
  • র‌্যান্সিডিটি: ফ্যাট বা তেল অক্সিডাইজড বা হাইড্রোলাইজড হয়ে তিক্ত বা দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থে পরিণত হয়।