** Study Nutrition ওয়েবসাইটে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাগত ** নিউট্রিশন সাবজেক্ট এর প্রথম বাংলা ওয়েবসাইট **

1.2 Components of Food (খাদ্যের উপাদান)

খাদ্যের উপাদান বলতে সেই পুষ্টি উপাদানগুলো বোঝানো হয়, যা আমাদের শরীরের সঠিক বৃদ্ধি, বিকাশ এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। খাদ্যের উপাদানগুলো প্রধানত সাতটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়:

১. শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট (Carbohydrates)
  • কার্যকারিতা: প্রধান শক্তির উৎস। শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।
  • উদাহরণ: ভাত, রুটি, আলু, শর্করা (চিনি)।
২. প্রোটিন (Proteins)
  • কার্যকারিতা: কোষ এবং টিস্যুর গঠন ও মেরামত। এনজাইম এবং হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে।
  • উদাহরণ: মাছ, মাংস, ডাল, ডিম, দুধ, বাদাম।
৩. স্নেহপদার্থ বা ফ্যাট (Fats)
  • কার্যকারিতা: শক্তির আরেকটি প্রধান উৎস। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, কোষের গঠন, এবং ভিটামিন শোষণে সহায়ক।
  • উদাহরণ: তেল, ঘি, মাখন, বাদাম, বীজ।
৪. ভিটামিন (Vitamins)
  • কার্যকারিতা: বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ত্বক, চোখ এবং হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখা।
  • উদাহরণ:
    • ভিটামিন A: গাজর, পালং শাক, মিষ্টি আলু।
    • ভিটামিন C: আমলকি, পেয়ারা, কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি।
    • ভিটামিন D: দুধ, ডিমের কুসুম, সূর্যালোক।
    • ভিটামিন E: বাদাম, বীজ, সবুজ শাকসবজি।
    • ভিটামিন K: ব্রকলি, পালং শাক, কফি।
৫. খনিজ পদার্থ (Minerals)
  • কার্যকারিতা: হাড় এবং দাঁতের গঠন, রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠন, নার্ভ এবং পেশীর কার্যক্ষমতা বজায় রাখা।
  • উদাহরণ:
    • ক্যালসিয়াম: দুধ, পনির, দই, সবুজ শাকসবজি।
    • আয়রন: লাল মাংস, পালং শাক, ডাল, কিসমিস।
    • পটাশিয়াম: কলা, আলু, কমলা, টমেটো।
    • ম্যাগনেসিয়াম: বাদাম, বীজ, শাকসবজি, মাছ।
৬. জল (Water)
  • কার্যকারিতা: শরীরের প্রায় 60% গঠন করে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ কার্যকারিতায় ভূমিকা পালন করে, যেমন দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টি উপাদান পরিবহন, বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন, কোষের কার্যক্ষমতা বজায় রাখা।
  • উদাহরণ: পানীয় জল , ফলের রস, স্যুপ, শাকসবজি।
৭. খাদ্যতন্তু বা রাফেজ (Dietary Fiber/Roughage)
  • কার্যকারিতা: পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে, কোলেস্টেরল কমায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, আন্ত্রিক স্বাস্থ্য রক্ষা করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
  • উদাহরণ:
    • ফলমূল: আপেল, কলা, কমলা, পেয়ারা, বেরি।
    • শাকসবজি: গাজর, ব্রকলি, ফুলকপি, পালং শাক, মটরশুটি।
    • পূর্ণ শস্য: ওটস, ব্রাউন রাইস, পুরো গমের রুটি, বার্লি।
    • ডাল ও বাদাম: ছোলা, মসুর ডাল, মটর ডাল, বাদাম।
    • বীজ: চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্সসিড, সূর্যমুখী বীজ।

খাদ্যের ৭ উপাদানকে একটি ছকের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হলো:
খাদ্য উপাদানউপাদানের ধরনউদাহরণকার্যকারিতা
কার্বোহাইড্রেটসসরল কার্বোহাইড্রেটসগ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, গ্যালাক্টোজদ্রুত শক্তি সরবরাহ করে
দ্বিগুচ্ছ কার্বোহাইড্রেটসসুক্রোজ, ল্যাক্টোজ,
মল্টোজ
শক্তি সরবরাহ এবং হজমে সহায়ক
জটিল কার্বোহাইড্রেটসস্টার্চ, সেলুলোজ, গ্লাইকোজেনদীর্ঘমেয়াদী শক্তি, ফাইবার সরবরাহ করে
প্রোটিনসসম্পূর্ণ প্রোটিনমাংস, মাছ, ডিমশরীরের কোষ গঠন ও মেরামত
অসম্পূর্ণ প্রোটিনশস্য, বাদাম, শাকসবজিশরীরের বৃদ্ধি এবং উন্নয়ন সহায়ক
ফ্যাটস্যাচুরেটেড ফ্যাটমাখন, পশুর চর্বিশক্তি সরবরাহ, সেল মেমব্রেন গঠন
আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটঅলিভ অয়েল, মাছের তেলহৃদরোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যকর চর্বি
ট্রান্স ফ্যাটপ্রসেসড ফুড, বেকারি প্রডাক্টসস্বাস্থ্য ক্ষতিকারক, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি
ভিটামিনসফ্যাট-সলিউবল ভিটামিনসভিটামিন A, D, E, Kভিন্ন ভিন্ন শারীরিক কার্যক্রমে সাহায্য
ওয়াটার-সলিউবল ভিটামিনসভিটামিন C, ভিটামিন B কমপ্লেক্সইমিউন সিস্টেম বুস্ট, শক্তি উৎপাদন
মিনারেলসম্যাক্রোমিনারেলসক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়ামহাড়ের গঠন, স্নায়ুতন্ত্র কার্যক্রম
ট্রেস মিনারেলসআয়রন, জিঙ্ক, কপাররক্তের গঠন, এনজাইম কার্যক্রম
জল পানীয় জল, ফলের রস, সবজিশরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, সেল কার্যক্রম
ফাইবারফল, শাকসবজি, পুরো শস্যহজমে সহায়ক, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ