** Study Nutrition ওয়েবসাইটে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাগত ** নিউট্রিশন সাবজেক্ট এর প্রথম বাংলা ওয়েবসাইট **

2.1 Health Definition, Dimensions of Health- namely Physical, Mental and Social, Positive Health Indicator (স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিক -শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক)

স্বাস্থ্য মানুষের জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বাস্থ্য বলতে বোঝায় একটি সম্পূর্ণ শারীরিক, মানসিক, ও সামাজিক সুস্থতা, এবং শুধুমাত্র রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতি নয়। স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, সুষম খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন প্রয়োজন।

সংজ্ঞা:

The World Health Organization (WHO) defines health as a "state of complete physical, mental and social well-being and not merely the absence of disease or infirmity."

অর্থাৎ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) স্বাস্থ্যকে সংজ্ঞায়িত করেছে এভাবে:

"স্বাস্থ্য হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ শারীরিক, মানসিক, এবং সামাজিক দিক দিয়ে সুস্থ থাকে, এবং শুধুমাত্র রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতি নয়।"

এই সংজ্ঞা অনুযায়ী, স্বাস্থ্য শুধুমাত্র অসুস্থ না থাকাই নয়। এটি শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে এবং সামাজিকভাবে ভালো বোধ করার বিষয়।

স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিক:
স্বাস্থ্যের মূল তিনটি দিক ও তার লক্ষণ নিচে আলোচনা করা হলো:

1. দৈহিক স্বাস্থ্য: দৈহিক স্বাস্থ্য এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও সিস্টেমগুলি সঠিকভাবে কাজ করে এবং ব্যক্তি কোন রোগ বা শারীরিক অসুবিধা থেকে মুক্ত থাকে।

ভালো দৈহিক স্বাস্থ্যের লক্ষণ :

শারীরিক গঠন:              সুগঠিত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ 
ওজন:                            বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী স্বাভাবিক
ত্বক:                               মসৃন, উজ্জ্বল ও লাবণ্যময়
চুল:                                কোমল,উজ্জ্বল ও সহজে উঠে আসে না
চোখ:                              উজ্জ্বল,স্বচ্ছ ও ক্লান্তিহীন
ঠোঁট:                              মসৃন, গোলাপি বর্ণ ও ভেজা ভাব
জিভ:                             গোলাপি, সাদা ভাবহীন
মাড়ি:                             মুশরিক, গোলাপি ও মজবুত
দাঁত:                              পরিষ্কার, উজ্জ্বল ও মাড়ির সাথে দৃঢ়ভাবে যুক্ত
নখ:                               মসৃন, ভঙ্গুর নয় 
পেট:                              স্বাভাবিক অর্থাৎ সমতল
মেদ:                              মেদ কম থাকে
ভঙ্গিমা:                          ঋজু
ক্ষুধা:                              স্বাভাবিক
হজমশক্তি:                    স্বাভাবিক
নিঃশাস:                        দুর্গন্ধ বিহীন
পেশী:                            শিথিলতা থাকে ও সুগঠিত
অস্থি:                             দৃঢ়,মজবুত ও বিকৃতমুক্ত 
ঘুম:                               সুনিদ্রা, পর্যাপ্ত ও গাঢ়
স্নায়বিক নিয়ন্ত্রণ:           শান্ত, স্থির ও মনোযোগী
দৈহিক সঞ্চালক:           স্বাভাবিক 

2. মানসিক স্বাস্থ্য: মানসিক স্বাস্থ্য বলতে বোঝায় এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি তার নিজস্ব সামর্থ্য বুঝতে পারে, জীবনের সাধারণ চাপ মোকাবিলা করতে পারে, উৎপাদনশীলভাবে কাজ করতে পারে, এবং তার কমিউনিটির সাথে অবদান রাখতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যা একসাথে মানসিক স্থিতিশীলতা ও সুখানুভূতি নিশ্চিত করে। 

মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষণ:
  1. ইতিবাচক মেজাজ: আনন্দ, শান্তি, এবং সন্তুষ্টির অনুভূতি।
  2. উচ্চ আত্মমর্যাদা: নিজেকে মূল্যবান ও সম্মানজনক মনে করা।
  3. সংকট মোকাবিলা করার ক্ষমতা: জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষমতা।
  4. পর্যাপ্ত ঘুম: নিয়মিত ও মানসম্মত ঘুম।
  5. সামাজিক সংযোগ: পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো ও তাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা।
  6. সৃজনশীলতা ও উৎপাদনশীলতা: কাজে মনোযোগ ও সৃজনশীলতা বজায় রাখা।
  7. শারীরিক স্বাস্থ্যের সাথে সামঞ্জস্য: শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য একে অপরের সাথে সংযুক্ত।
3. সামাজিক স্বাস্থ্য: সামাজিক স্বাস্থ্য বলতে বোঝায় একজন ব্যক্তির সামাজিক সম্পর্ক, যোগাযোগ, এবং সামগ্রিক সামাজিক জীবনের মান। এটি সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং সম্পর্কের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সামাজিক স্বাস্থ্য বজায় রাখা ব্যক্তিগত উন্নতি এবং সমাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সহায়ক।

সামাজিক স্বাস্থ্যের লক্ষণ:
  1. সক্রিয় সামাজিক জীবন: সামাজিক কার্যক্রমে নিয়মিত অংশগ্রহণ।
  2. ইতিবাচক সম্পর্ক: পরিবার, বন্ধু, এবং সহকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক।
  3. মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা: সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা।
  4. সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা: সামাজিক সমস্যার সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
  5. মানুষের প্রতি সহানুভূতি: অন্যদের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শন।
সংক্ষেপে:
দৈহিক স্বাস্থ্য: রোগের অনুপস্থিতি এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় ও কর্মক্ষম থাকার ক্ষমতা।
মানসিক স্বাস্থ্য: ভালো মানসিক অবস্থা যা চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।সামাজিক স্বাস্থ্য: অন্যদের সাথে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলার এবং বজায় রাখার ক্ষমতা।

 স্বাস্থ্যের অন্যান্য দিক:

1.আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য: আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য মানে হলো একটি গভীর সংযোগ এবং উদ্দেশ্যের অনুভূতি, যা ব্যক্তির মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি ধর্ম, দর্শন, ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং জীবনের অর্থের সন্ধানের সাথে সম্পর্কিত। আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য একজন ব্যক্তির জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমতা এবং প্রশান্তি বজায় রাখতে সহায়ক হয়।

আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের লক্ষণ:
  1. আত্মতুষ্টি ও প্রশান্তি: অন্তর্দৃষ্টি এবং মানসিক প্রশান্তির অনুভূতি।
  2. অন্তর্দৃষ্টি ও আত্মবিশ্বাস: নিজের প্রতি বিশ্বাস এবং অন্তর্দৃষ্টি।
  3. কৃতজ্ঞতা ও ক্ষমা: জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং অন্যদের ক্ষমা করার ক্ষমতা।
  4. উদ্দেশ্য ও অর্থ: জীবনের উদ্দেশ্য এবং অর্থ খুঁজে পাওয়া।
  5. আধ্যাত্মিক অনুশীলন: নিয়মিত প্রার্থনা, ধ্যান বা অন্যান্য আধ্যাত্মিক অনুশীলন।