** Study Nutrition ওয়েবসাইটে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাগত ** নিউট্রিশন সাবজেক্ট এর প্রথম বাংলা ওয়েবসাইট **

2.12 Nitrogen Balance [Elementary Concept] (নাইট্রোজেন সাম্য : প্রাথমিক ধারণা)

১. নাইট্রোজেন সাম্যের সংজ্ঞা:

নাইট্রোজেন সাম্য হল শরীরের নাইট্রোজেন গ্রহণ এবং নির্গমনের মধ্যে ভারসাম্য। যখন আমরা প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করি, তখন শরীর নাইট্রোজেন গ্রহণ করে। প্রোটিন বিপাকের মাধ্যমে এই নাইট্রোজেন শরীরে ব্যবহৃত হয় এবং অতিরিক্ত নাইট্রোজেন প্রস্রাব, মল, ঘাম এবং অন্যান্য নির্গমন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়।

২. নাইট্রোজেন সাম্যের প্রকারভেদ:

নাইট্রোজেন সাম্যের তিনটি প্রকার রয়েছে:

  1. ইউনাইট্রোজেন সাম্য (Zero Nitrogen Balance):

    • নাইট্রোজেন গ্রহণ এবং নির্গমন সমান থাকে।
    • শরীরের প্রোটিন গ্রহণ ও ক্ষয়প্রাপ্ত প্রোটিন পুনরুদ্ধার সমান হয়।
  2. ইতিবাচক নাইট্রোজেন সাম্য (Positive Nitrogen Balance):

    • নাইট্রোজেন গ্রহণ নির্গমনের চেয়ে বেশি।
    • সাধারণত বৃদ্ধি, গর্ভাবস্থা, পুনরুদ্ধার, এবং পেশী গঠনের সময় দেখা যায়।
    • শরীরে প্রোটিন গঠনের প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায়।
  3. ঋণাত্মক নাইট্রোজেন সাম্য (Negative Nitrogen Balance):

    • নাইট্রোজেন নির্গমন গ্রহণের চেয়ে বেশি।
    • অপুষ্টি, দীর্ঘমেয়াদী রোগ, ট্রমা, এবং সৃষ্টির সময় দেখা যায়।
    • শরীরে প্রোটিন ক্ষয় বৃদ্ধি পায় এবং পেশী ও টিস্যুর ক্ষতি হয়।

৩. নাইট্রোজেন সাম্য মূল্যায়ন:

নাইট্রোজেন সাম্য মূল্যায়ন (Nitrogen Balance Assessment) হল একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে শরীরে প্রোটিন গ্রহণ এবং প্রোটিন ক্ষয়ের মধ্যকার ভারসাম্য নির্ধারণ করা হয়। এটি সাধারণত পুষ্টি সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণা এবং চিকিৎসা মূল্যায়নে ব্যবহৃত হয়।

নাইট্রোজেন সাম্য মূল্যায়নের ধাপসমূহ:

১. নাইট্রোজেন গ্রহণ নির্ধারণ:

নাইট্রোজেন গ্রহণ নির্ধারণের জন্য প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ জানা প্রয়োজন এবং তারপর নির্ধারিত ফ্যাক্টর ব্যবহার করে হিসাব করা হয়। প্রোটিনে সাধারণত ১৬% নাইট্রোজেন থাকে, যা প্রতি গ্রাম প্রোটিনে প্রায় ০.১৬ গ্রাম নাইট্রোজেন সমান। আমরা সাধারণত ৬.২৫ ফ্যাক্টর ব্যবহার করি কারণ:

১ গ্রাম নাইট্রোজেন=৬.২৫ গ্রাম প্রোটিন

নাইট্রোজেন গ্রহণ নির্ধারণের জন্য প্রোটিন গ্রহণকে ৬.২৫ দ্বারা ভাগ করতে হয়। 

উদাহরণ:

ধরা যাক, একজন ব্যক্তি দৈনিক ১০০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করেন।

নাইট্রোজেন গ্রহণ=প্রোটিন গ্রহণ (গ্রামে).২৫\text{নাইট্রোজেন গ্রহণ} = \frac{\text{প্রোটিন গ্রহণ (গ্রামে)}}{৬.২৫}

নাইট্রোজেন গ্রহণ=১০০ গ্রাম.২৫=১৬ গ্রাম\text{নাইট্রোজেন গ্রহণ} = \frac{১০০ \text{ গ্রাম}}{৬.২৫} = ১৬ \text{ গ্রাম}


অর্থাৎ, সেই ব্যক্তি দৈনিক ১৬ গ্রাম নাইট্রোজেন গ্রহণ করছেন।​

২. নাইট্রোজেন নির্গমন নির্ধারণ:

নাইট্রোজেন নির্গমন প্রধানত প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, তবে মল, ঘাম এবং অন্যান্য নির্গমনের মাধ্যমে কিছু পরিমাণ নাইট্রোজেন নির্গত হয়। সাধারণত, প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্গত নাইট্রোজেনের পরিমাপ করে নাইট্রোজেন নির্গমন নির্ধারণ করা হয়।

৩. মোট নাইট্রোজেন নির্গমন হিসাব:

প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্গত নাইট্রোজেনের সাথে মল এবং অন্যান্য নির্গমন যোগ করে মোট নাইট্রোজেন নির্গমন হিসাব করা হয়। একটি সাধারণ সূত্র হলো:

মোট নাইট্রোজেন নির্গমন (g)=প্রস্রাবের নাইট্রোজেন (g)+4 (মল এবং অন্যান্য নির্গমন)

৪. নাইট্রোজেন সাম্য নির্ধারণ:

নাইট্রোজেন সাম্য নির্ধারণ করতে নাইট্রোজেন গ্রহণ এবং মোট নাইট্রোজেন নির্গমনের পার্থক্য বের করা হয়।

নাইট্রোজেন সাম্য (g)=নাইট্রোজেন গ্রহণ (g)মোট নাইট্রোজেন নির্গমন (g)

নাইট্রোজেন সাম্য মূল্যায়নের ফলাফল:

১. ইউনাইট্রোজেন সাম্য (Zero Nitrogen Balance):

  • ফলাফল: নাইট্রোজেন গ্রহণ এবং নির্গমন সমান।
  • অর্থ: শরীরের প্রোটিন গ্রহণ ও ক্ষয়প্রাপ্ত প্রোটিন পুনরুদ্ধার সমান হয়।

২. ইতিবাচক নাইট্রোজেন সাম্য (Positive Nitrogen Balance):

  • ফলাফল: নাইট্রোজেন গ্রহণ নির্গমনের চেয়ে বেশি।
  • অর্থ: শরীরে প্রোটিন গঠন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সাধারণত বৃদ্ধি, গর্ভাবস্থা, পুনরুদ্ধার, এবং পেশী গঠনের সময় দেখা যায়।

৩. ঋণাত্মক নাইট্রোজেন সাম্য (Negative Nitrogen Balance):

  • ফলাফল: নাইট্রোজেন নির্গমন গ্রহণের চেয়ে বেশি।
  • অর্থ: শরীরে প্রোটিন ক্ষয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অপুষ্টি, দীর্ঘমেয়াদী রোগ, এবং ট্রমার সময় দেখা যায়।

নাইট্রোজেন সাম্যের গুরুত্ব:

  1. পুষ্টি মূল্যায়ন: নাইট্রোজেন সাম্য মূল্যায়ন করে একজন ব্যক্তির প্রোটিন চাহিদা এবং পুষ্টির অবস্থা নির্ধারণ করা যায়।
  2. বৃদ্ধি ও বিকাশ: শিশুদের বৃদ্ধি, গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য, এবং শরীরের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে।
  3. চিকিৎসা ও পুনর্বাসন: অপুষ্টি, দীর্ঘমেয়াদী রোগ, এবং অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসন পরিকল্পনা নির্ধারণে সহায়ক।
  4. ক্রীড়া ও শরীরচর্চা: ক্রীড়াবিদ এবং শরীরচর্চার সময় প্রোটিনের চাহিদা মূল্যায়ন করতে সহায়ক।