** Study Nutrition ওয়েবসাইটে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাগত ** নিউট্রিশন সাবজেক্ট এর প্রথম বাংলা ওয়েবসাইট **

2.10 Physiological functions of protein (প্রোটিন এর শারীরবৃত্তীয় কাজ)

প্রোটিন শরীরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন করে। নিচে প্রোটিনের কিছু প্রধান শারীরবৃত্তীয় কাজ তুলে ধরা হলো:

১. কোষ এবং টিস্যুর গঠন

প্রোটিন আমাদের শরীরের কোষ এবং টিস্যুর গঠন ও মেরামতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। মাংসপেশী, ত্বক, চুল, নখ ইত্যাদি প্রধানত প্রোটিন দিয়ে তৈরি।

২. এনজাইমের কার্যকারিতা

প্রোটিন এনজাইমের মূল উপাদান। এনজাইম শরীরে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ ও ত্বরান্বিত করে, যা বিপাকক্রিয়া এবং অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৩. হরমোন উৎপাদন

অনেক হরমোন প্রোটিন থেকে তৈরি হয়। উদাহরণস্বরূপ, ইনসুলিন একটি প্রোটিন হরমোন যা রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

৪. ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা

প্রোটিন অ্যান্টিবডি গঠনে সহায়ক যা আমাদের শরীরকে জীবাণু, ভাইরাস এবং অন্যান্য রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে।

৫. পরিবহন এবং সংরক্ষণ

হেমোগ্লোবিন একটি প্রোটিন যা অক্সিজেন পরিবহন করে। প্রোটিন শরীরের বিভিন্ন উপাদান যেমন লিপিড, ভিটামিন এবং মিনারেল পরিবহনে সাহায্য করে।

৬. এনার্জি সরবরাহ

প্রোটিন শরীরের এনার্জি সরবরাহ করতে পারে। যখন কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের সরবরাহ কম থাকে, তখন প্রোটিন এনার্জি উৎপাদনের উৎস হিসেবে কাজ করে।

৭. পিএইচ এবং ফ্লুইড ব্যালান্স নিয়ন্ত্রণ

প্রোটিন শরীরের পিএইচ (অম্ল-ক্ষার) এবং ফ্লুইড (তরল) ব্যালান্স বজায় রাখতে সাহায্য করে। অ্যালবুমিন এবং গ্লোবুলিন প্রোটিন রক্তে তরল ব্যালান্স বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৮. কোষ সংকেত প্রদান

প্রোটিন কোষ সংকেত প্রদান করে এবং কোষের মধ্যে এবং কোষের বাইরে বিভিন্ন সংকেত আদান-প্রদান করে, যা শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রোটিনের শারীরবৃত্তীয় কাজের মধ্যে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম রয়েছে যা আমাদের শরীরের সঠিক কার্যক্রম এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিচে প্রোটিনের কিছু অতিরিক্ত শারীরবৃত্তীয় কাজ তুলে ধরা হলো:

৯. কোষ সিগন্যালিং

প্রোটিন কোষের মধ্যে এবং কোষের বাহিরে সিগন্যাল পাঠাতে এবং গ্রহণ করতে সহায়ক। এই সিগন্যালিং প্রক্রিয়া কোষের বৃদ্ধি, বিভাজন, এবং মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করে।

১০. কাঠামোগত সমর্থন

প্রোটিন শরীরের বিভিন্ন কাঠামোগত উপাদান যেমন কলাজেন, কেরাটিন, এবং ইলাস্টিন তৈরি করে। এই উপাদানগুলি ত্বক, চুল, নখ, এবং সংযোগস্থলের কাঠামোগত সমর্থন প্রদান করে।

১১. মেটাবলিজমের নিয়ন্ত্রণ

প্রোটিন শরীরে মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পর শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়, যা ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে।

১২. স্মৃতি এবং জ্ঞানীয় কার্যক্রম

প্রোটিন নিউরোট্রান্সমিটার তৈরি করতে সাহায্য করে, যা মস্তিষ্কে স্নায়বিক সংকেত প্রেরণ করে এবং স্মৃতি, জ্ঞানীয় কার্যক্রম এবং মনোযোগ বজায় রাখতে সাহায্য করে।

১৩. টক্সিন নিরসন

কিছু প্রোটিন টক্সিন নিরসনে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, গ্লুটাথাইওন একটি প্রোটিন যা শরীরের বিষাক্ত পদার্থ নিরসনে সহায়ক।

১৪. রক্তের জমাট বাঁধা

প্রোটিন রক্তের জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফাইব্রিনোজেন একটি প্রোটিন যা রক্তের জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয় ফাইব্রিন তৈরি করে।

১৫. লিপিড এবং গ্লুকোজ বিপাক

প্রোটিন লিপিড এবং গ্লুকোজের বিপাকে সহায়ক। উদাহরণস্বরূপ, লিপোপ্রোটিন ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল পরিবহন করে, এবং বিভিন্ন প্রোটিন ইনসুলিন সংবেদনশীলতা নিয়ন্ত্রণ করে।

১৬. তাপ উৎপাদন

শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। থার্মোজেনেসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রোটিন শরীরে তাপ উৎপাদন করে, যা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।